সারা বাংলা

বগুড়ায় রথযাত্রায় আহতদের খোঁজ নিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী

বগুড়ায় রথযাত্রায় বিদ্যুতায়িত হয়ে আহত রোগীদের খোঁজ নিতে এসেছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা। সোমবার (৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আহত রোগীদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন। পাশাপাশি তিনি অন্য রোগীদেরও খোঁজ নেন।  

প্রতিমন্ত্রী রোকেয়া সুলতানা বলেন, ‌‘আমি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এখানে এসেছি আহতদের খোঁজ খবর নিতে। এদের মধ্যে কয়েকজন একটু বেশিই বার্ন (দগ্ধ) হয়েছেন। বাকি যারা আছেন আমি আশা করছি, তারা সবাই ভালো হয়ে যাবেন। তবে, সময় লাগবে।’ 

এ সময় তিনি হাসপাতালের ডাক্তার, নার্সসহ স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘হাসপাতালের ডাইরেক্টর (পরিচালক) থেকে শুরু করে অধ্যক্ষ এবং সুইপার পর্যন্ত সবাই ভালোভাবে কাজ করেছেন। রোগীরা অনেক সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আমাদের সরকার আহতদের চিকিৎসায় সব ওষুধই বিনা পয়সায় দিচ্ছে।’ 

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বার্ন ইউনিট নেই কেন এবং বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে বার্ন ইউনিট চালু করা হচ্ছে না কেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেকটি জেলায় একটি করে বার্ন ইউনিট করার কথা রয়েছে। শুধু বার্ন ইউনিট না কার্ডিয়াক ইউনিট, নিউরো সায়েন্স ইউনিট করার পরিকল্পনা অনুমোদন হয়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে এগুলো বাস্তবায়ন শুরু করবো। বিশেষ করে বিভাগীয় শহরগুলোতে করার পর পর্যায়ক্রমে জেলাগুলোতে করা হবে।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘বার্ন ইউনিট একেবারেই নেই তা নয়। প্রত্যেকটি হাসপাতালেই একটি করে রুম থাকে যেখানে বার্ন পেশেন্ট (রোগী) থাকেন। বার্ন পেশেন্ট বা অ্যাক্সিডেন্ট (দুর্ঘটনা) এটার তো কোনো সীমা থাকে না। পর্যাপ্ত বিজ্ঞ চিকিৎসক না পেলে বার্ন ইউনিট কিন্তু শুরু করা উচিত হবে না। আমি কোয়ালিটি চাই, কোয়ান্টিটি চাই না।  কোয়ালিটি সম্পন্ন চিকিৎসক তৈরি করে আমরা যখন দিতে পারবো জেলা পর্যায়ে তখন আমরা ইনশাআল্লাহ এটা করতে পারবো। এটা আমাদের নিয়মের মধ্যেই আছে। এটা আমাদের সরকার অনুমোদনও করেছে।’

এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বগুড়া-৬ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু, বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মো. মোস্তফা আলম নান্নু, বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য শাহাদারা মান্নান, বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান মজনু, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জুলফিককার আলম, অধ্যক্ষ ডা. মো. রেজাউল আলম জুয়েল, বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার, সিভিল সার্জন ডা. শফিউল আজম প্রমুখ। 

উল্লেখ্য, বগুড়ায় রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪০ জন। রোববার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে বগুড়া শহরের সেউজগাড়ী আমতলা মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- অলোক, আতশি রানী, রঞ্জিতা, নরেশ মোহন্ত ও জলি রানী সাহা।

পুলিশ জানিয়েছে, বিকেল ৫টার দিকে সেউজগাড়ী ইসকন মন্দির থেকে রথযাত্রা বের হয়। সেউজগাড়ী আমতলা এলাকায় পৌঁছালে রথের চূড়াটি সড়কের ওপর দিয়ে যাওয়া উচ্চ ভোল্টেজের বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে আসে। এতে আগুন ধরে যায়। এ সময় র‌থের ওপরে বসে থাকা এবং নিচে থাকা অনেকে আহত হন। তাদের উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান‌ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে পাঁচজনকে মৃত ঘোষণা করেন।