প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ইস্যু নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বক্তব্যের জেরে সারজিস আলম বলেছেন, তিনি ‘মহামান্য পদে’ বসে ষড়যন্ত্র আঁকছেন।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) রংপুর সফর করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। সন্ধ্যায় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারকে ‘রাষ্ট্র সংস্কারের তারুণ্যের ভাবনা’ শিরোনামে আলোচনা সভায় যোগ দেন তিনি। সেখানে রাষ্ট্রপতির বিষয়ে এই কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস।
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের রেখে যাওয়া দোসর বাংলাদেশের মহামান্য পদে থেকে নতুন করে ষড়যন্ত্র আঁকছেন। তাকে এই পদ থেকে তাকে সরানোর জন্য আমাদের আলোচনা চলছে।’
একটি জাতীয় পত্রিকায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই তাকে নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। তার পদত্যাগের দাবি তোলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
পদত্যাগের দাবিতে ২২ অক্টোবর বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ হয়, রাষ্ট্রপতির নিজ জেলা পাবনায় মশাল মিছিল ও সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আলোচনা হয়।
গত ২৪ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে রাষ্ট্রপতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। এ ক্ষেত্রে ‘খুব বিলম্ব নয়, আবার তাড়াহুড়াও নয়’ এমন অবস্থান গ্রহণের কথা বলেছে সরকার।
তবে এই মুহূর্তে রাষ্ট্রপতি পদে শূন্যতা সৃষ্টি হলে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ বিলম্বিত হবে বলে মনে করে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
এদিকে, শনিবার সকাল ১১টার দিকে রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম। তার সঙ্গে সেখানে ছিলেন সারজিস আলম।
পরে আইজিপির সঙ্গে তিনি রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখান থেকে সন্ধ্যায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক।
সারজিস আলমের রংপুর আগমনকে কেন্দ্র জাতীয় পার্টি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। এ দিন দুপুরে দলটির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার নেতৃত্বে মিছিলটি বের হয়। পরে তারা সমাবেশ করেন।
সমাবেশে মোস্তফা বলেন, ‘সমন্বয়ক সারজিসের একা রংপুরে আসার ক্ষমতা নেই। এ কারণে পুলিশের আইজিপির সঙ্গে তিনি এখানে এসেছেন। এটা কাপুরুষতার পরিচয়। রংপুরের মাটিতে তাদের যদি কোনো সমাবেশ হয়, তবে সেখানেই তাদের প্রতিহত করা হবে।’