সারা বাংলা

গভীর রাতে তালা ভেঙে বাসভবনে ভিসি, শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম 

গভীর রাতে তালা ভেঙে বাসভবনে ভিসি, শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম 

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ ক্যাম্পাসের বাসভবনে অবস্থান নিয়েছেন। এই খবরে বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে তাকে বাসভবন ছেড়ে চলে যেতে আল্টিমেটাম দিয়েছে।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কুয়েট শিক্ষার্থীরা এই আল্টিমেটাম দেন।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কুয়েট শিক্ষার্থী শেখ রাহাতুল ইসলাম। তিনি জানান, আজ সকাল সাড়ে ১০টায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ভিসি তার বাসভবন থেকে বের হয়ে যাবেন বলে তারা আশা করছেন। না হলে তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদল এবং বিএনপির নেতাকর্মীরা কুয়েটের শিক্ষার্থীদের ওপর চাপাতি ও রামদা নিয়ে হামলা চালায়। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা, কুয়েটের সব শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবি উত্থাপন করি। আল্টিমেটাম দেওয়ার পরও শিক্ষার্থীদের সব দাবি না পূরণ করায়, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বারংবার মিথ্যাচার ও প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ায় কুয়েটের শিক্ষার্থীরা ভিসিকে বর্জন করে। এরই অংশ হিসেবে গত ২১ ফেব্রুয়ারি কুয়েটের সব শিক্ষার্থী মিলে ভিসির বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। সোমবার  ২৪ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক ১১ টায় খবর আসে, ভিসির বাসভবনের তালা ভেঙে ফেলা হয়েছে, আমাদের স্থানীয় কিছু শিক্ষার্থীরা সেখানে যায় এবং সত্যতা নিশ্চিত করে। তারা আরো জানতে পারে, ভিসিসহ আরো কিছু অজ্ঞাত মানুষ ভিসি বাসভবনের ভেতরে অবস্থান করছে।”

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, “আমরা স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিতে চাই, মাসুদ স্যার আমাদের ভিসি না, আমরা মাসুদ স্যারকে ভিসি হিসেবে বর্জন করেছি। তাই মাসুদ স্যার ভিসির বাস ভবনে ঢুকতে পারবে না। ভিসি বাসভবনে যারা অবস্থান করছে, ভিসিসহ তাদের বেরিয়ে যাওয়ার জন্য, আমরা আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিচ্ছি। এরপর আমরা আমাদের স্থানীয় শিক্ষার্থীদের নিয়ে আবার ভিসি বাসভবনে তালা লাগিয়ে দেব। মাসুদ স্যারের কোনো অধিকার নেই ভিসি বাসভবনে থাকার। আমরা আমাদের নতুন ভিসির জন্য ভিসি বাসভবন সংরক্ষণ করব। এর আগে পর্যন্ত আমরা এখানে তালা দিয়ে রাখব।”

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আমরা আরেকটি বিষয় জানিয়ে দিচ্ছি, যেহেতু আমরা ভিসিকে বর্জন করেছি, সেহেতু এই বর্জনকৃত ভিসির নিয়োগকৃত তদন্ত কমিটিকে আমরা কেউ গ্রহণ করছি না। এখানে ভিসি তার আস্থাভাজন, আমাদের আন্দোলনে বিতর্কিত শিক্ষকদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এই তদন্ত কমিটিকে আমরা সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করছি এবং এই কমিটির অধীনে প্রকাশিত প্রতিবেদন, আমরা কখনোই মেনে নেব না। আমরা আমাদের নতুন অভিভাবকের অধীনে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য অপেক্ষা করছি।” 

কুয়েটের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর শেখ শরিফুল আলম জানান, তিনি ভিসির অনুপস্থিতিতে চারদিন দায়িত্বে ছিলেন। সোমবার রাত ১১ টার দিকে ভিসি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে তিনি বাসায় ফিরে যান। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় ডিন ও বিভাগীয় প্রধানদের সভা রয়েছে। 

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও আল্টিমেটাম এর বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে জেনেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।