সারা বাংলা

ফায়ার ফাইটার গাউসুলের বাড়িতে চলছে মাতম 

সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ গাউসুল আজমের মৃত্যুতে যশোরে তার গ্রামের বাড়িতে চলছে মাতম। তার মৃত্যুতে স্বজনদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। 

গাউসুল আজমের বাড়ি যশোরের মণিরামপুর উপজেলার খাটুয়াডাঙ্গা গ্রামে। স্বামীর অকাল মৃত্যুতে নির্বাক হয়ে গেছেন স্ত্রী কাকলী। বিলাপ করতে করতে মা আছিয়া বেগম জ্ঞান হারাচ্ছেন। আর বাবার কান্নায় ভারি হয়ে গেছে গোটা পরিবেশ। গাউসুল আজমের ৫ মাস ১০ দিন বয়সী ছেলে সিয়াম তার চাচার কোলে। অবুঝ শিশুটি জানে না এই বয়সেই সে বাবা হারা হলো।

রোববার (১৩ জুন) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

গাউসুলের মামাতো ভাই রমজান আলী জানান, এই পরিবারে তিনিই ছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম। মামার চাষের জমিও তেমন নেই। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে সংসার চলবে সেটাই চিন্তার বিষয়।

আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: আরেক ফায়ার ফাইটারের মৃত্যু

খাটুয়াডাঙ্গা গ্রামের আজগর আলী দম্পতির দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে গাউসুল ছোট। তিনি ২০১৬ সালে খাটুয়াডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। ২০১৮ সালে তিনি ফায়ার ফাইটার হিসেবে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে যোগ দেন। এরপর একই ইউনিয়নের কাজীয়াডা গ্রামের কাকলীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

নিহতের ফুফাতো ভাই জানান, মাস দুয়েক হলো গাউসুল সীতাকুণ্ডে ডিউটিতে ছিলেন। এর আগে বাগেরহাটে কর্মরত থাকাকালে তিনি প্রায়ই বাড়িতে আসতেন। চট্টগ্রামে ৬ মাসের জন্যে তাকে পাঠানো হয়।

খাটুয়াডাঙ্গা সাকুলের প্রধান শিক্ষক হজরত আলী বলেন, গাউসুল আজম সৎ ও সাহসী ছিলো। মেধার কারণে সে চাকরি পেয়েছিলো। তাকে হারিয়ে আমরা শোকাহত।  

উল্লেখ্য, গত ৪ জুন রাতে সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হন গাউসুল আজম। সেদিন রাতেই তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এই অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান ৪৮ জন। যার ১০ জনই ফায়ার সার্ভিস কর্মী।